চুলকানি হলে এলার্জির সবচেয়ে ভালো ঔষুদ কোনটি

চলকানি বা ত্বকের এলার্জি এমন একটি সমস্যা- যা প্রায় সকল বয়সের মানুষকে কোনো না কোনো ভাবে ভোগায়।কখন ও হঠা করে ত্বকে চুলকানি শুরু হয়।আবার চুলকানি হয় লালদাগ,ফুসফুড়ি বা ফোলাভাবসহ। তবে অনেকেই এটি ত্বকের এলার্জি বা আবহাওয়ার পরিবর্ত্নের কারনে মূলত পেয়ে থাকেন। তাই চুলকানির মূল কারণ জানা এবং সঠিক ঔষদ নির্বাচন করা অত্যন্ত জরুরি।


আমরা এই আর্টিকেল থেকে জানতে পারি- চুলকানি কারণ,ঘরোয়া প্রতিকার,এবং সবচেয়ে ভালো এলার্জি ঔষদ গুলোর সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা।

পোস্ট সূচিপত্রঃ

চুলকানির প্রধান কারণ সমূহ

চুলকানি (itching বা pruritus) নানা কারণে হতে পারে। তবে এটি একটি সাধরণ ত্বকের সমস্যা,যা এলার্জি,ধুলাবালি,এবং ঘাম বা শুস্ক ত্বকের কারণে হতে পারে।নিয়মিত পরিস্কার- পরিচ্ছন্নতা ত্বকের যত্ন নিলে প্রতিরোধ করা সম্ভাব।যেমনঃ

এলার্জি (Allergic Reaction): এর মধ্যে খাবার,ধুলা বালি,ফুলের পরাগ,মশা বা কীটের কামড়,অথবা প্রশাধন সামগ্রীর প্রতিক্রিয়া এলার্জি হতে পারে।

ত্বকের সমস্যা(Skin Conditions): একজিমা (Eczema) সোরিয়াসিস (Psoriasis) ফাঙ্গাল ইনফেকশন বা স্ক্যবিস ইত্যাদি চুলকানি হতে পারে।

ওষুদের পাশ্বপ্রতিক্রিয়াঃ যেমন ঔষুদের কিছু অ্যান্টিবায়েটিক বা পেন কিলার ব্যবহার করণে শরীরে চুলকানি শুরু হতে পারে।

পরিবেশগত কারণঃ অতিরক্ত গরম,আদ্রতা,বা শুস্ক আবহওয়া ও ত্বকের সংবেদনশীল হয়ে পড়ীবং চুলকানি দেখা দেয়।

অভ্যন্তরীণ রোগঃ লিভার কিডন, থাইরয়েড কিংবা ডায়বেটিকসজনিত সমস্যাতেও মাঝে মাঝে দেখা দিতে পারে। 

⚠️ এলার্জি থেকে চুলকানির লক্ষন।

এলার্জি হলে শরিরে কিছু লক্ষন দেখা দেয়।যেমনঃ 

  • ত্বকে লালচে দাগ বা র‍্যাশ 
  • ত্বকের নিদির্ষ্ট স্থানে জ্বালা বা পোড়া অনুভাব হয়
  • চোখ বা ঠোঁট ফোলে জাওয়া 
  • বারবার হাঁচি বা কাশি এবং ঘুমের ব্যাঘাত ঘটা

এই লক্ষন গুলো দেখা দিলে ধরে নেওয়া যায় যে চুলকানি বা এলার্জি লক্ষন,তবে দ্রুত সঠিক চিকিসাও এলার্জি ট্রিগার এড়িয়ে চলা জরুরি।

চুলকানি হলে এলার্জি সবচেয়ে ভালো ঔষুদ

এলার্জি বা চুলকানি কমানোর জন্য বাজারে অনেক ধরনের ঔষুদ পাওয়া যায়।তবে কোনটি সবচেয়ে ভালো,তা নির্ভর করে চুলকানি ধরন,এবং সেই ব্যাক্তির অবস্থার উপর। নিচে সবচেয়ে জনপ্রিয় ও কার্যকারি ব্যবহিত কিছু এলার্জি প্রতিরোধ  ঔষুদের তালিকা দেওয়া হলো।

অ্যান্টিহিস্টামিন ট্যাবলেট(Antihistamine Tablet)

এলার্জি হলে হিস্টামিন নামক রাসায়নিক নিঃসূত হয়,যা চুলকানি তেরি করে। অ্যান্টিহিস্টামিন ঔষুধ এই হিস্টামিনের কার্যক্রম বন্ধ করে চুলকানি কমায়। 

সবচেয়ে কার্যকারি ঔষুদসমূহ 

ওষুদের নাম                  কার্যকারিতা                                              মন্তব্য

Cetirizine                  দ্রুত আরাম দেয়,ঘুম আনতে পারে             রাতে খাওয়া ভালো

Loratadine               ঘুম আনে না,দিনে ব্যবহার উপযোগি          হালকা এলার্জি

Fexofenadine          দীর্ঘস্থায়ী কাজ করে,ঘুম আনে না                অফিসগামিদের জন্য ভালো

Levocetirizine        ধুলাবালি ও ত্বকজনিত এলার্জিতে                 হালকা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

                                কার্যকর

⚠️সতর্কতাঃ গর্ভবতী নারী বা দির্ঘদিনের রোগিদের ক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

 
স্টেরয়েড ক্রিম(Steroid cream)
যদি ত্বকে লালচে র‍্যাশ বা প্রদাহ থাকে,তাহলে স্টেরয়েডযুক্ত ক্রিম দ্রুত আরাম দেয়।
 
কিছু ক্রিম এর নাম দেওয়া হলোঃ
  • Betnovate cream
  • Hydrocortisone cream
  • Fucidin H cream 
এগুলো আক্রান্ত স্থানে দিনে ১-২ বার ইউজ করা যায়।তবে অতিরিক্ত ব্যবহার করলে ত্বকের ক্ষতি হতে পারে,তাই আমরা সর্বদা ডাক্টর পরামর্শ নিতে হবে।

অ্যান্টিবায়েটিক ক্রিম(যদি সংক্রমণ হয়)

যদি চুলকানির কারণে ত্বকে ঘা বা সংক্রমণ দেখা দেয়।তখন আপনাকে ডাক্টার Fucidin,Neobacrin, বা Bactroban জাতীয় অ্যান্টিবায়েটিক ক্রিম দিতে পারেন  

প্রাকূতিক ও ঘরোয়া উপায়

ওষুদ ছাড়াও অনেক সময় ঘরোয়া উপায়ে চুলকানি কমানো যাবেঃ যেমন

  • ঠান্ডা পানিতে ভেজানো আক্রান্ত স্থানে চাপা
  • অ্যালোভেরা জেল লাগানো
  • নিম্পাতা  সেদ্ধপানি দিয়ে আক্রান্ত স্থানে ধোয়া
  • নারকেল তেল লাগান    
তবে এই উপায়গুলো বিষেশ করে শিশু বা সেনসেটিভ ত্বকের নিরাপদ। 

কখন চিকিৎসকের কাছে যাবেন

চুলকানি বা এলার্জি কয়েক দিনের মধ্যে না সারে ,ত্বকে লাল দাগ,ফোলা বা ঘা দেখা দিলে অবশ্যিই কিৎসকের কাছে যাওয়া জরুরি। যদি শ্বাসকস্ট,চোখ- মুখে ফোলে সারাশরীরে চুলকানি ছড়িয়ে পড়ে,তাহলে দেরি না করে চর্মরোগ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।অনেক সময় অনিয়ন্তিতভাবে বাজারের ঔষুদ খাওয়ার ফলে পাশ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে।

তাই আমাদের কে ঘরোয়া চিকিৎসা বা সাধরণ ক্রিম কাজ না করলে দেরি না করে একজন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে যাওয়া অবশ্যই জরুরি।তবে সঠিক সময় চিকিৎসা নিলে সমস্যা নিয়ন্ত্রে আসে এবং ভবিষ্যতে জটিলতা এড়ানো যায়।নিজের ত্বক ও স্বাস্থোর যত্ন নেন,এবং সচেতন থাকুন এবং প্রোয়োজন মতো চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।  
  • চুলকানি এক সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হুয়
  • ত্বকে ফুসফুড়ি বা পুঁজ দেখা দেয়
  • শরীর ফুলে যায় বা শ্বাস নিতে কস্ট হয়
  • ঘুম,কাজ বা দৈনন্দিন জীবনে ব্যাঘাত ঘটে
তবে এগুলো দেখা দিলে আপনাকে চিকিৎসক সাধরণত রক্ত পরীক্ষা বা স্কীন টেস্ট করে মূল কারণ নির্ধরণ করুন।
  

চুলকানি ও এলার্জি যত্নে শেষ পরামর্শ

চুলকানি ও এলার্জি একে উপরের সঙ্গে ঘনিষ্টভাবে সম্পকিত।শরীরে যখন কোনো পদার্থের প্রতি অস্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া দেখায়,তখন এলার্জি হয়,এবং তার প্রধান কারণ চুলকানি।এই সমস্যা সাময়িক হলেও অবহেলা করলে বড় ধরনের ত্বক সমস্যা তৈরি করতে পারে।তাই সঠিক কারণ শনাক্ত করে অ্যান্টিহিস্টামিনবা উপযুক্ত ক্রিম ব্যবহার করে আরাম পাওয়া যায়।

চুলকানি প্রতিরোধে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় শনাক্ত করা এবং সেটি থেকে নিজেকে দূরে রাখা।পাশাপাশি পর্যাপ্ত ঘুম,মানসিক প্রশান্তি, সুষম খাদ্যগ্রহন করা এবং পরিস্কার- পরিচ্ছন্ন জীবন যাপন এলার্জি ও চুলকানি এড়াতে বড় ভূমিকা  রাখে। তাই নিজের ত্বকের প্রতি নিজ যত্ন নেন এবং প্রয়োজনের সময় ডাক্টরের পরামর্শ নিলে সমস্যাটি থেকে স্থায়ী স্বস্তি পাওয়া সম্ভাব।সচেতন থাকুন।সুস্থ থাকুন                                 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url